জুনাইদ আল হাবীব, নেত্রকোনা, বারহাট্টা প্রতিনিধি,

গাজীপুরে তিন মাস আগে এক প্রাইভেটকার চালককে হত্যার ঘটনায় দুই যুবক গ্রেপ্তার হয়েছেন, যাদের ছিনতাইকারী বলছে পুলিশ।

বুধবার সন্ধ্যায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ জাকির হাসান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর মহানগর পুলিশ সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য প্রকাশ করেন।

গ্রেপ্তাররা হলেন টঙ্গীর এরশাদনগরের মো. রুবেল মিয়ার ছেলে রাব্বি হোসেন (২১) ও ঢাকার দক্ষিণখানের ময়নার টেকের মো. ছবিরের ছেলে শিপন হোসেন (২৩)।

সংবাদ সম্মেলনে জাকির হাসান জানান, গত ১ মার্চ রাতে গাজীপুর মহানগরের গাছা থানাধীন মালেকের বাড়ির একটি পোশাক কারখানার প্রাইভেটকার চালক জাহিদুল ইসলাম ঢাকায় কয়েকজন কর্মকর্তাকে নামিয়ে গাজীপুরে ফিরছিলেন। পথে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাছিমপুর এলাকায় প্রাইভেটকার থামিয়ে সড়কের সামনে প্রস্রাব করতে যান।

এই সময় ৩-৪ জনের একদল ছিনতাইকারী তার মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা মাথা ও উরুসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে টহল পুলিশের উপস্থিত টের পেয়ে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়।”

পরে পুলিশ জাহিদকে উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনায় ২ মার্চ নিহতের বড়ভাই সাইফুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা করেন।

জাকির হাসান আরও জানান, পালিয়ে যাওয়ার সময় আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। বুধবার সন্ধ্যায় গাজীপুর মহানগরের দিঘীরপাড় থেকে শিপন এবং টঙ্গীর এরশাদনগর থেকে রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

“প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে ঘটনাস্থলের অদূরে কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিলের দেয়ালের পাশে পরিত্যক্ত স্থান থেকে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি সুইচ গিয়ার চাকু উদ্ধার করেছে।”

অন্যদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেপ্তারদের গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।

টঙ্গী পূর্ব থানায় শিপনের নামে ২০২০ সালের একটি ছিনতাই মামলা এব্ং রাব্বির বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের একটি মাদক মামলা রয়েছে বলে তিনি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে মহানগর পুলিশের এডিসি হাসিবুল আলম, এসি পীযুষ কুমার দে, টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গাজীপুরে ছিনতাইকালে বাঁধা দেওয়ায় এক প্রাইভেটকার চালককে খুন করেছে ছিনতাইকারী। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই ছিনতাইকারীকে চাকুসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা এ ঘটনায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে। এরপ্রেক্ষিতে ক্লুলেস এ ঘটনার প্রায় ৩ মাস পর রহস্য উন্মোচন করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)। আজ বৃহষ্পতিবার জিএমপি’র উপ পুলিশ কমিশনার জাকির হাসান এ তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- ঢাকার দক্ষিণখান এলাকার ময়নারটেক এলাকার মো. ছবিরের ছেলে শিপন (২৩) এবং গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানাধীন এরশাদ নগর এলাকার মো. রুবেল হোসেনের ছেলে মো. রাব্বি (২১)।

নিহতের নাম- জাহিদুল ইসলাম (৩৫)। তিনি নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা থানার লামাপাড়া এলাকার মৃত হযরত আলীর ছেলে।

জিএমপি’র ওই কর্মকর্তা জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মালেকের বাড়িস্থ এমাজিং ফ্যাশন কারখানার গাড়ি চালক পদে চাকুরি করেন। গত ১ মার্চ রাতে কারখানার কর্মকর্তাদের ঢাকায় নামিয়ে প্রাইভেট কার নিয়ে কারখানায় ফিরছিলেন জাহিদুল। রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি টঙ্গীর মাছিমপুর এলাকার পিপলস সিরামিক কারখানার সামনে পৌছেন। সেখানে তিনি কারটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে দাঁড় করিয়ে প্রস্রাব করতে যান। এসময় ৩/৪ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী তাকে ঘেরাও করে তার কাছ থেকে জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তাদেরকে বাঁধা দিলে সন্ত্রাসীরা মাথা ও পায়ে ছুরিকাঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থলের পাশে থাকা পুলিশের টহল টিম এগিয়ে আসলে দুষ্কৃতিকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে স্থানীয় শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জাহিদুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

তিনি জানান, গাড়ি চালক জাহিদুল খুনের এঘটনায় নিহতের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের করেন। তাৎক্ষণিকভাবে এ খুনের কারণ জানা যায় নি। তদন্তকালে পুলিশ সিসি টিভির ফুটেজ ও নানা তথ্য সংগ্রহ করে। ওই ফুটেজের সূত্র ধরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শিপন ও রাব্বিকে বুধবার রাতে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা কার চালক জাহিদুলকে খুন করার কথা স্বীকার করে। ছিনতাইকালে বাঁধা দেওয়ায় জাহিদুলের মাথায় ও ডান পায়ের উরুতে ছুরিকাঘাত করা হয় বলে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু বৃহষ্পতিবার স্থানীয় কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিলের দেওয়াল সংলগ্ন পরিত্যাক্ত জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপ্রেক্ষিতে ক্লুলেস এ ঘটনার প্রায় ৩ মাস পর গাড়ি চালক জাহিদুল ইসলাম খুনের রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার ছিনতাইকারী। তাদের বিরুদ্ধে এর আগের ছিনতাই ও মাদকের মামলা রয়েছে।